মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

২১, ২৫, ২৮ ধারা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার তাৎপর্য, গুরুত্ব একেকজন মানুষের কাছে একেকরকম। আপনার কাছে মুক্তিযুদ্ধকে মহান মনে হলেই আরেকজন মানুষের কাছে মুক্তিযুদ্ধকে কেন মহান মনে হতে হবে ? আপনার কাছে জাতির জনক, জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার যেরকম গুরুত্ব সেরকম গুরুত্ব আরেকজন বাংলাদেশীর কাছে না থাকলে আপনি আইনের ভয় দেখিয়ে জোর করে গুরুত্ব তৈরি করবেন নাকি ? কোন ব্যক্তিই বা কোন কিছুই সমালোচনার উর্ধ্বে থাকা উচিত নয়। তা সেটা বঙ্গবন্ধুই হোক, জাতীয় সঙ্গীতই হোক, জাতীয় পতাকাই হোক আর মুক্তিযুদ্ধই হোক। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অসম্মান করে তাকে শাস্তি না দিয়ে, কারাদন্ড না দিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হোক - কেন তার কাছে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অপমানের যোগ্য মনে হল ? Why ? 
তাকে কারণ জিজ্ঞেস করা হবে। যদি তার কারণ যৌক্তিক হয় তবে ছেড়ে দেয়া হবে আর যদি অযৌক্তিক হয় তবে যুক্তিতর্কের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে হবে। সেটা না করে শাস্তির বিধান কেন ? শাস্তির ভয় দেখিয়ে অনলাইনে প্রগাপান্ডা বা প্রচার চালানো হয়ত বন্ধ করা যাবে কিন্তু দৃষ্টিভঙ্গি তো আর পাল্টাতে পারবেন না। দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোই তো আসল। আপনি নিশ্চয়ই চান না যে জাতির জনকের প্রতি কারোর মনে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থাকুক। তাই না ? 
মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে ফেসবুকে, ইনস্টাগ্রামে, টুইটারে যত অপমানই করা হোক; যতই গালিগালাজ করা হোক শুধুমাত্র ভার্চুয়াল জগতের লেখার জন্য কাউকে দশ বছর কারাদন্ড দেয়া যায় না, কারোর জীবন থেকে 10 বছর কেড়ে নেয়া যায় না। এটা পাগলামি। দশটা বছর মানে বুঝেন ? দশ বছর জেলে থেকে আসার পর একজনের পুরো জগৎটাই চেঞ্জ হয়ে যাবে, জেলের বাইরে এসে সে পরিচিত কোনকিছুই খুঁজে পাবে না। তার পরিচিত দোকান থাকবে না, তার পরিচিত মডেলের মোবাইল ফোন আর পাওয়া যাবে, তার পরিচিত খেলার মাঠে বিল্ডিং গড়ে উঠবে, তার দাদু দিদা অপেক্ষা করতে করতে মরে যাবে, তার পরিচিত অবিবাহিত বন্ধুবান্ধবদের বাচ্চাকাচ্চা পর্যন্ত বড় হয়ে যাবে। এত পরিবর্তন ঘটবে, কিন্তু সে কিছুই জানবে না। এটা যে কত কষ্ট তা শুধু প্রচন্ড কল্পনাশক্তি আছে এমন মানুষই ( যেমন আমি ) বুঝবে। এত বড় শাস্তি কেন ? মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকাকে অপমান করার জন্য, তাও আবার ভার্চুয়াল জগতে ( Fake world এ )। যে কাজের জন্য কোন শাস্তিই হওয়া উচিত না, সেই কাজের জন্য মৃত্যুদন্ডতুল্য শাস্তি !!! 

বঙ্গবন্ধুকে বা অন্য কোন সাধারণ ব্যক্তিকে, যাকেই অপমান করা হোক। অপমানকারীকে কিছুতেই ২ সপ্তাহর বেশী জেল দেয়া যায় না। পৃথিবীতে কারোর সম্মান এত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না যে তার সম্মানে মৌখিকভাবে আঘাত করার জন্য ২ সপ্তাহর বেশী জেল দেয়া যায়। বইয়ে লিখে অপমান করলে হয়ত একমাস এবং বই থেকে অপমানজনক কথা মুছে ফেলার আইনী নির্দেশ দেয়া যেতে পারে। আর সোশাল মিডিয়ায় ফটোশপ করে অপমান করলে ১ মাস কারাদন্ড এবং ঐ ছবি সোশাল মিডিয়া থেকে ডিলিট করার আইনী নির্দেশ দেয়া যায়। আর সোশাল মিডিয়ায় শুধু পোস্ট লিখে অপমান করলে একদিনও শাস্তি দেয়া উচিত হবে না। কারণ, ভার্চুয়াল জগতের লেখার এক পয়সাও দাম নাই। সামনাসামনি অপমান করলে সেটাকে বড় করে দেখা উচিত। সোশাল মিডিয়ায় লিখিত অপমান দেখাই উচিত না। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, ব্লগ এসব সোশাল মিডিয়ায় শুধু লিখিত অপমানের জন্য তর্ক করে বুঝানো বাদে অন্য কোন পদক্ষেপ নেয়াটাই বাড়াবাড়ি। সর্বোচ্চ অপমানকারী ব্যক্তিকে অপমানিত ব্যক্তির সাথে যুক্তিতর্কে লিপ্ত হবার আইনী নির্দেশ দেয়া যায়। যদি অপমানকারী তর্কে হেরে যায় তবে তাকে শুধু ক্ষমা চাইতে হবে। ব্যাস আর কিছু না। 
























কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন