মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২০

ধর্ম সমালোচনার অধিকার চাই, দোজখে যাবার অধিকার চাই

মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী, আপনার কেন মনে হয় যে সবকিছুর একজন স্রষ্টা আছে ? স্রষ্টা নাও তো থাকতে পারে। হতেও তো পারে পৃথিবীর সব ধর্ম মিথ্যা এবং সব ধর্মপ্রচারক মিথ্যাবাদী ও জোচ্চর। ওসব মিথ্যুক ধর্মপ্রচারকদের বলা মিথ্যা আমরা হাজার হাজার বছর ধরে বংশপরম্পরায় মেনে চলেছি। ছোটবেলায় বাবা মা প্রথম ধর্ম সমন্ধে জ্ঞান দেয়, আর বাবা মাকে আমরা ভালবাসি বিধায় তাদের শেখানো ফেলতে কষ্ট হয়। এই আর কি। আহামরি ব্যাপার নয়। চেষ্টা করলে অবশ্যই সম্ভব ধর্ম থেকে বেরিয়ে আসা। ধর্মের প্রতি মনে সন্দেহ আনুন, বিশ্বাসে ফাটল ধরান। 
তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে, আপনার ধর্মটা সঠিক। তবু প্রশ্ন চলে আসে - স্রষ্টা প্রণীত ধর্মটা সমালোচনা করার জন্য শাস্তি প্রদানের অধিকার রাষ্ট্রকে তথা মানুষকে কে দিয়েছে ? ধর্ম সমালোচনার জন্য যদি কেউ শাস্তি দিতে পারে, তবে সেটা কেবলমাত্র স্রষ্টা। রাষ্ট্র নয়। স্রষ্টার সম্মান ও স্রষ্টা প্রণীত ধর্ম, কিতাব, পয়গম্বরের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্র নিজের হাতে তুলে নেয়ায় প্রমাণ হচ্ছে - 
স্রষ্টা নিজের সম্মান, নিজের প্রেরিত ধর্ম, কিতাব, দূতের সম্মান রক্ষা করতে পারে না। আপনারা ধর্মানুভূতি রক্ষার্থে আইন বানিয়ে স্রষ্টাকে ছোট করছেন, অসম্মান করছেন। স্রষ্টা নিজের সম্মান, নিজের প্রেরিত ধর্ম, কিতাব, দূতের সম্মান নিজেই রক্ষা করতে পারে। এই দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে না। ধর্মের সমালোচনা করার আইনত অধিকার প্রদান করুন। নাহয় স্রষ্টা আমাদের দোজখেই পাঠাল। ওটা নিয়ে আপনার চিন্তা করতে হবে না। আপনারা দোজখে যাবেন না। ধর্ম সমালোচনার অধিকার চাই, দোজখে যাবার অধিকার চাই। 
মানুষের ব্যক্তিগত অনুভূতির মূল্য আছে কিন্তু ধর্মানুভূতিসহ যেকোন সমষ্টিগত অনুভূতির মূল্য কম। কেন কম ? কারণ, অনুভূতি মাপার কোন যন্ত্র না থাকলেও সামান্য common sense থাকলেই এটা বুঝা যায় যে সবাই একসাথে মনে কষ্ট পেলে, সেই কষ্ট সবার মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। তখন প্রতিটা মানুষ আলাদাভাবে তেমন কষ্ট পায় না। ধর্মীয় অনুভৃতিতে আঘাত করতে দিন, প্লিজ। 
একজন হিন্দু যদি ইসলাম ধর্মের সমালোচনা করে বা একজন মুসলিম যদি হিন্দু ধর্মের সমালোচনা করে তবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধার সম্ভাবনা আছে। হিন্দুরা সংখ্যালঘু হওয়ায় হয়ত দাঙ্গায় জড়াবে না, কিন্তু মুসলিমরা চাইলে ঠিকই হিন্দুদের উপর চড়াও হয়ে যেতে পারে। এক ধর্মের মানুষ যদি আরেক ধর্মের সমালোচনা করে তবে দাঙ্গা না বাধলেও ক্ষোভ অসন্তোষ জন্ম নেয়াটাই স্বাভাবিক এবং সেই ক্ষোভ অসন্তোষ আকমণে রূপ নিতে কতক্ষণ ? কাজেই, ধর্ম সমালোচনার আইনত অধিকার ধার্মিকদের না দিয়ে শুধু ধর্মহীনদের ( নাস্তিক ও সংশয়বাদী ) দেয়া হোক। হ্যা, নাস্তিকরা ধর্ম সমালোচনা করলেও ক্ষোভ অসন্তোষ জন্ম নিবে ঠিকই কিন্তু সেই ক্ষোভ, অসন্তোষ শুধু ব্যক্তিগত আক্রমণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। প্রত্যেক ধর্ম সমালোচনাকারী নাস্তিক ব্লগারকে পুলিশী সুরক্ষা প্রদান করা হোক। ব্যাস, ঝামেলা শেষ। এখন হয়ত ভাবছেন - "ধর্মহীনদের ধর্ম সমালোচনার অধিকার দেয়া হবে কিন্তু ধার্মিকদের দেয়া হবে না - এটা কেমন কথা ? আইন তো সবার জন্য সমান হওয়া উচিত।" ...... সেক্ষেত্রে আমি বলব, ''এসব ব্যাকডেটেড দৃষ্টিভঙ্গি বাদ দিন। আইন সবার জন্য সমান হবার দরকার নাই। Change your point of view.'' 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন