বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯

নারীবাদ নিপাত যাক, মানবতা মুক্তি পাক

পৃথিবীতে প্রায় সকল খারাপের উৎস হল - পৌরষত্ব। এই যে ভার্সিটিতে Ragging হয়, জুনিয়রদের নিয়ে মজা করা হয়, কেন হয় ? কারণ Rag দেবার সময় সিনিয়রদের মনে হয়, ''আমি পুরুষ, আমি যা খুশি ইচ্ছা করতে পারি।'' কত ছাত্র শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে। ... তারপর বন্ধুমহলে একজন যদি সিগারেট না খায়, সবাই বলে, ''হালা, তুই মাইয়া মানুষ নাকি ? সিগারেট খা, পুরুষ হ।'' এমনকি এই যে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস এবং ধর্মীয় মৌলবাদের কারণে রক্তপাত এটার পিছনেও কোন না কোনভাবে পৌরষত্বই দায়ী।
নারীবাদ পৌরষত্বকে উস্কে দেয়, কিভাবে ? নারীবাদীরা বলে, ''পুরুষের সাথে নারী যেমন আচরণই করুক না কেন, পুরুষ কিছুতেই নারীকে অসম্মান করতে পারবে না। পুরুষকে নারী চড় মারলেও পুরুষ নারীকে চড় মারতে পারবে না, নারীর গায়ে হাত তুলতে পারবে না। যে পুরুষ নারীকে অসম্মান করে সে সত্যিকার পুরুষ নয়।'' এভাবে নারীবাদ পৌরষত্বকে উস্কানী দেয়। জন্মের পর একটা ছেলেকে শেখানো হয় - ''তুমি ব্যথা পেলে কাঁদতে পারবা না, একটা মেয়ে তোমাকে যতই অসম্মান করুক তুমি ঠিকই সবসময় সম্মান করবা; কারণ তুমি পুরুষ।'' পুরুষরাও যে মানুষ, সমাজ তা বুঝে না। পুরুষেরও ব্যাথা আছে, কষ্ট আছে। ব্যাথা সহ্য করে বা নারীর অপমান হজম করে সত্যিকার পুরুষ হবার কোন প্রয়োজন নাই, নারীকে পাল্টা অপমান করে হাফ লেডিস হওয়াটা অনেক বেশী সম্মানজনক। ভার্সিটির ragging, ক্লাসে বুলিং, ছাত্রলীগের মারামারি, বাসে আগুন দেওয়া, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ধর্মীয় উগ্রতা, পুলিশের লাঠিচার্জ সব খারাপের পিছনেই পৌরষত্ব ভূমিকা পালন করে। সমাজ থেকে খারাপকে দূর করতে হলে এবং নারীবাদের বিষবৃক্ষকে ধ্বংস করতে হলে সবার আগে পৌরষত্বের ভূত মাথা থেকে ছাড়াতে হবে। সত্যিকারের পুরুষ হবার চেয়ে ভাল মানুষ হওয়াটা কি বেশী গুরুত্বপূর্ণ নয় ? এখন হয়ত অনেকে বলবে, ''পুরুষরা যদি সত্যিকার পুরুষ না হয় তবে সে ভাল মানুষও নয়।'' একেবারে ফালতু এবং অযৌক্তিক কথা। কোন বইয়ে লেখা আছে সত্যিকার পুরুষ না হলে ভাল মানুষ হওয়া যায় না ? যত্তোসব আজাইরা কথা। 
নারীকে কেন সবসময় সম্মান করতে হবে ? নারী মায়ের জাত বলে ? পুরুষও তো বাবার জাত ? বাবার চয়ে মায়ের মর্যাদা কেন বেশী হবে ? একটা মেয়ে ধর্ষণের শিকার হলে সবার দরদ উথলে উঠে আর পুরুষ জাতিকে গালিগালাজ করতে করতে চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করে দেয়। আর যখন একটা ছেলে ধর্ষণের শিকার হয়, তখন কেউ তার জন্য দরদ দেখায় না বরং হাজার বছর ধরে পুরুষশাসিত সমাজে নারীর নির্যাতনের কথা স্মরণ করে সবাই একটু খুশিই হয় - পুরুষও একটু নির্যাতিত হোক, নাকি ? ঐ ধর্ষিত পুরুষকে নিয়ে হাসাহাসি করে মেয়েরা তো বটেই, এমনকি ছেলেরাও। পুরুষের প্রতি নির্যাতনে পুরুষরাও সহানুভূতি অনুভব করে না। পুরুষরা ভাবে, ''ধর্ষিত বা নারীর দ্বারা লাঞ্ছিত পুরুষের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর মানেই হল পৌরষত্বহীনতার প্রতি সহানুভূতি দেখানো। আমরা পুরুষ। আমাদের মাঝে আছে পৌরষত্ব। আমরা যদি ঐ নারীর দ্বারা লাঞ্ছিত পৌরষত্বহীন পুরুষর প্রতি সহানুভূতি দেখাই, তাহলে সেটা আমাদের পৌরষত্বের জন্য অপমানজনক।''  ( আগেই বলেছি - পৌরষত্ব হল সকল খারাপের উৎস ) তাছাড়া, মেয়েরা নারীবাদী ছেলেদের বেশী পছন্দ করে। তাই নারীবাদী হলে নারীদের পটানো সহজ হয়। এজন্য অনেক ছেলে নারীবাদী হয়। 
পুরুষের সম্মান নারীর চেয়ে কোন অংশে কম নয়। নারী যদি পুরুষকে অপমান করতে পারে, চড় মারতে পারে। তবে পুরুষও নারীকে অপমান করতে পারে, থাপ্পড় মারতে পারে। নারী-পুরুষ সমান অধিকার। সঠিক ? যদি আপনার বাবা ধর্ষিত হত ! যদি আপনার ভাই ধর্ষিত হত, যদি আপনার বয়ফ্রেন্ড বা হাজবেন্ড ধর্ষিত হত, আপনার ছেলে ধর্ষিত হত ! তখন কেমন লাগত ? আগে মেয়েরা বলত, ''ঘরে মা বোন নাই ?'' এখন আমরা ছেলেরা বলছি, ''ঘরে বাপ ভাই নাই ?'' খুশি তো ? নারীবাদীদের কাজই তো হয়েছে পুরুষদের দুরবস্থা দেখে খুশি হওয়া। হাজার বছর ধরে পুরুষরা নারীদের শাসন বা শোষণ করছে বিধায় পুরুষদের উপর রাগ ক্ষোভ জন্মে গেছে, এখন পুরুষদের দুরবস্থা দেখে নারীবাদীরা খুশি হয়। পুরুষেরা হাজার বছর ধরে যা করে আসছে সেটা ভুলে যান, বাদ দিন। নারীবাদী মনোভাব ত্যাগ করুন। সবাই মানুষ। নারী নয়, পুরুষও নয় একজন মানুষ ধর্ষিত হয়েছে। নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে সহানুভূতি জানান। সবার উপর মানুষ সত্য, নারী নয়। 

নারী কোন পুরুষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই হল, যদি নারী পুরুষের অপরাধের প্রমাণ দিতে নাও পারে তবু সমাজে পুরুষটির মান সম্মান প্রতিষ্ঠা সব শেষ। অভিযুক্ত পুরুষ আর কোনদিন সমাজে মাথা উচু করে চলতে পারবে না। ভারতে যৌতুক ও ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগে প্রতি বছর আশি হাজার পুরুষ আত্মহত্যা করে। ছেলেদের সম্মান তো নারীর হাতের মুঠোয়। নারী সম্মান করলেই পুরুষের সম্মান আছে, আর নারী অসম্মান করলে পুরুষের সম্মান নাই। ... এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।  জনসমক্ষে কোন মেয়ে কোন ছেলেকে চড় মারলে কেউ কিচ্ছু বলে না, সবাই মনে করে দোষ ছেলেরই ( বাস্তবে নিষ্পাপ হলেও )। কিন্তু যদি ছেলে মেয়েকে চড় মারে, গণধোলাই নিশ্চিত। .... বেশীরভাগ সময় যখন একটা মেয়ে একটা ছেলেকে মাইর দেয় তখন অন্যরা মেয়েটাকে রক্ষা করে এবং ভয় দেখায়, '' মেয়েটা তোকে মার দিলে তুই হজম করবি। যদি পাল্টা মার দিস, আমরা সবাই মিলে তোকে পিটাব।'' ভয়ে ছেলে চুপচাপ মার হজম করে। এটা কিভাবে সমানতা হল ? সমানতা তো তখন হবে যখন নারী-পুরুষের জনের ঝগড়ায় নাক না গলিয়ে 2 জনকে এককভাবে লড়তে দেয়া হবে। তখন দেখো কে জেতে ? কিন্তু সেটা কেউ করবে না। কারণ, জানে এরকম হলে ছেলে পিটিয়ে মেয়েকে তার বাপের থুড়ি মায়ের নাম ভুলিয়ে দিবে। আমি যেকোন ধরণের মারামারি বিরোধী। কে দোষী আর কে সেটা আদালত নির্ধারণ করবে, পুলিশ বা জনগণ নয়। কিন্তু আদালতও কেন জানি মেয়েদের পক্ষেই থাকে। নারীর হাতে পুরুষকে লাঞ্ছিত হতে দেখলে সবাই খুশি হয়। তবে তাই হোক। কোন ভালবাসা দরকার নাই, কোন প্রেমের দরকার নাই, কোন সন্তান উৎপাদন হবে না। নারী-পুরুষ মারামারি করে মানবজাতি ধ্বংস হয়ে যাক। এটাই ভাল। যত্তোসব।

 নারীশাসিত সমাজে পুরুষেরা আজ নিপীড়িত, নির্যাতিত, লাঞ্ছিত। যখন দেখবেন রাস্তায় কোন ছেলে কোন মেয়েকে বিরক্ত করছে, তখন মেয়েটাকে বিরক্ত হতে দিন। মেয়েটাকে বাঁচাতে যাবেন না। হতেও তো পারে মেয়েটা ছেলেটার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছে না বিধায় ছেলেটা তার টাকা ফেরত চাচ্ছে অথবা মেয়েটার মিথ্যা অভিযোগে সমাজে ছেলেটার সম্মান ক্ষুণ্ন হওয়ায় ছেলেটা মেয়েটাকে অনুরোধ করছে যেন মেয়েটা নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়ে ছেলেটাকে তার হারানো সম্মান ফিরিয়ে দেয়। এটা তো নিশ্চয়ই স্বীকার করবেন যে, সবসময় বিরক্ত করাটা অপরাধ নয়, কখনো কখনো ক্ষেত্রবিশেষে বিরক্ত হওয়াটাই অপরাধ।
এমনকি ভালবাসার দাবী করে কোন মেয়েকে বিরক্ত করাটাও অপরাধ নয়। প্রায়ই এরকম দেখা যায়, কোন মেয়ে কোন ছেলের প্রেমের প্রস্তাবে প্রথমে সাড়া না দিলেও, ছেলেটা বারবার ভালবাসা চাওয়ায় মেয়েটা বিরক্ত হতে হতে একসময় ঠিকই ভালবেসে ফেলে। একবার যখন মেয়েটা ভালবেসে ফেলে, তখন আর কেউ এটা দেখে না যে ছেলেটা কোন একসময় মেয়েটাকে বিরক্ত করত কিনা। অর্থাৎ মেয়েটা ভালবাসল কিনা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ছেলের বিরক্ত করাটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না, এটা কোন বিষয়ই না। কাজেই, কোন ছেলে যদি কোন মেয়ের কাছে ভালবাসা চেয়ে চেয়ে মেয়েটাকে অনেক বিরক্ত করে শেষ পর্যন্ত ভালবাসা পেতে ব্যর্থ হয়, তবে ছেলেটাকে খারাপ ভাবার কোন দরকার নাই। কেন খারাপ ভাবব না উত্যক্তকারী ছেলেটাকে ? কারণ - যদি ছেলেটা উত্যক্ত করে মেয়েটার ভালবাসা অর্জন করতে সফল হত ( অনেকেই হয় ), তখন তো আমরা ছেলেটাকে খারাপ ভাবতাম না। এখন ছেলেটা ভালবাসা পেতে, মেয়েটার মন জয় করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে আপনারা তাকে খারাপ ভাববেন ? এটা কি আদৌ যুক্তিসঙ্গত ? ব্যর্থতার জন্য কাউকে খারাপ ভাবা যায় না। এখন হয়ত বলবেন - খারাপ ভাবছি উত্যক্ত করার জন্য। তখন আমি বলব, উত্যক্ত করে যদি সফল হলে তো ছেলেটাকে খারাপ ভাবতেন না। ... এবার কি বলবেন ? ...
আমার পরামর্শ হল, আইন করে দেয়া হোক - ভালবাসা চেয়ে একটা ছেলে একটা মেয়েকে সর্বোচ্চ একশবার অনুরোধ বা বিরক্ত করতে পারবে। অনুরূপভাবে একটা মেয়েও ভালবাসা চেয়ে একটা ছেলেকে সর্বোচ্চ একশবার অনুরোধ ( বিরক্ত ) করতে পারবে। যদি অনুরোধ একশবারের চেয়ে বেশী হয়, শুধুমাত্র তখনই তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। একশবার পর্যন্ত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। আর ভালবাসা বাদে অন্য কোন উপযুক্ত কারণে যতবার খুশি ততবার বিরক্ত করা যাবে। By the way, বুলিং এর পিছনে কোন কারণ থাকে না। তাই বুলিং একবার করলেও অপরাধ।
নারীবাদী কার্যক্রম সবচেয়ে বেশী দেখা যায় বাসের মধ্যে। মহিলাদের জন্য কোন সংরক্ষিত সিট কেন থাকবে ? প্রতিবন্ধী ছাড়া কারোর জন্যই সংরক্ষিত সিট থাকা উচিত না। আর যদি কারোর কোলে শিশু থাকে তখন তার জন্য সংরক্ষিত সিট রাখা যায়। শিশু শুধু মায়ের কোলে থাকে না, বাবার কোলেও থাকে।
নারীবাদ এটা বলে না যে নারী-পুরুষ সমান শক্তিশালী, তাই তাদের অধিকার সমান হওয়া উচিত। নারীবাদ বলে - যেহেতু নারীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল তাই তারা পুরুষের চেয়ে বেশী অধিকার deserve করে।
সেদিন আমি সিট ছেড়ে উঠে যাবার পর সিটের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা ষষ্ঠ বা সপ্তম শ্রেণীতে পড়া স্কুল বালককে বসতে না দিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েকে ডেকে এনে বাসানোর মানে কি ? মানে এটাই যে - নারীদের দুর্বল ভাবা এবং ছেলেদের চেয়ে বেশী সুবিধা দেয়া।
এটা অন্যায়। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের বিন্দুমাত্রও বেশী সুবিধা, বেশী অধিকার দেয়া যাবে না। কেবলমাত্র যৌন হয়রানি ছাড়া অন্য কোন কারণে, মৌখিক ঝগড়ার জের ধরে কোন মেয়ে কোন ছেলের গায়ে হাত তুলতে পারবে না বা চড় থাপ্পড় মারতে পারবে না। কথার জবাব কথা দিয়েই দিতে হবে। আর যদি কোন মেয়ে কোন ছেলেকে চড় মেরেই বসে, তবে ছেলেকেও সুযোগ দিতে হবে। মেয়েটাকে চড় মারার সুযোগ। তবেই না সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
সাধে কি আমি নারীবাদের বিরোধীতা করি ? উপযুক্ত কারণ আছে বলেই বিরোধীতা করি। নারীদেরও নারীবাদের বিরোধীতা করা উচিত। পুরুষেরা পৌরষত্ব ছাড়ুন, নারীরা নারীত্ব ছাড়ুন। আসুন, সবাই মিলে মানুষ হই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন