শনিবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৪

একান্তই আমার আমি


  • আমার একটা জন্মগত স্বভাব আছে। সেটা হল - সবাই সাধারণত যেভাবে চলতে পছন্দ করে, যেভাবে চিন্তা করে পছন্দ করে। আমি সেভাবে চলতে বা চিন্তা করতে পছন্দ করি না। যে কোন কাজ করার সময় আমার মাথায় এই চিন্তা কাজ করে যে, যদি আমার কাজটা দশজনের সাথে মিলে যায় তাহলে তাদের সাথে আমার পার্থক্যটা থাকল কি ? যেমন, ক্লাস 9 এ যারা বিজ্ঞান বিভাগে পড়ে তারা সাধারণত ডাক্তার ইন্জিনিয়ার হওয়ার চিন্তাভাবনা করে, অন্তঃত বেশীরভাগই। আমি ভাবলাম যে, বেশীরভাগই যেহেতু ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার হতে চায় আর তাই তারা ইন্জিনিয়রিং ইউনিভার্সিটি বা মেডিক্যালে পড়াশুনা করে। এখন আমিও যদি প্রায় সবার মত ডাক্তার বা ইন্জিনিয়ার হতে চাই, তাহলে সবার সাথে আমার পার্থক্যটা থাকল কি ? কেননা, বিজ্ঞানী হওয়ার চেষ্টা করা যাক। যেমন ভাবা তেমন কাজ। ফলিত বিজ্ঞানে না পড়ে আজ আমি মৌলিক বিজ্ঞানে পড়ছি। এই একটা উদাহরণ। তারপর - ফুটবলে বাংলাদেশের বেশীরভাগ মানুষ ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা support করে। আর এইজনই আমি এ দুইটা দলকে দুই চোক্ষে দেখতে পারি না। এমন একটা দল আমি সাপোর্ট করি যেটা প্রায় কেউই support করে না বললেই চলে, ফ্রান্স। পরীক্ষায় দুইটা প্রশ্নের মধ্যে একটা লিখতে হবে। যে প্রশ্নের উত্তর সহজ সেটি সবাই লিখছে, আমিও ঐটাই হয়ত লিখতাম কিন্তু সবাই ঐ প্রশ্নের উত্তর দিছে বলেই আমি সেটা দিই নাই, বিকল্প প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি। আবার, আমার ক্লাসের সবাই জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে বিশ্ব-রেকর্ড করতে গেছিল বলেই আমি সেখানে যাই নাই। যদি আমার কোন classmate না যেত, তাহলে আমি অবশ্যই যেতাম। সবাই বাম হাতে ঘড়ি পড়ে, আর এজন্যই আমি ডানহাতে পড়ি। সবাই ডানহাতে পড়লে অবশ্যই আমি বামহাতে পড়তাম। এরকম আর কি। এটা আমার জন্মগত স্বভাব। যে কোন কাজ করতে গেলে মাথায় এই চিন্তাটা খেলা করে যে, যদি কাজটা বা কাজটা করার কৌশল সবার সাথে মিলে যায় তাহলে সবার সাথে আমার পার্থক্যটা থাকল কি ? অনেক বন্ধু আমাকে বলছে, ''সবাই তো বেঁচে থাকতে চায়, তুমিও চাও কেন ? সবাই তো সুখী হতে চায়, তুমি চাও কেন ? সবাই তো জামাকাপড় পড়ে ঘুরে বেড়ায়, তুমিও কেন সবার মত পোষাক পড়ে চল ? তুমি না চাও যে সবসময় সবার সাথে তোমার একটা পার্থক্য বজায় থাকুক, তাহলে এসব ব্যাপারে কেন তুমি সবার সাথে এক ? বল, জবাব দাও।'' এ প্রশ্নের উত্তরে আমি বলি, ''কিছু কিছু মৌলিক জিনিস তো একরকম হবেই। একেবারে সবকিছু তো আর ভিন্ন হওয়া সম্ভব না। তাই না ? হাজার হোক, মানুষ তো। so, কিছু কিছু তো মিল থাকবেই। কিন্তু তারপরও আমাদের চেষ্টা করা উচিত, সবার থেকে কিছু না কিছু দিক দিয়ে different হওয়ার জন্য। কেননা, একরকম হওয়ার মধ্যে কোন সার্থকতা নাই। সবার থেকে যদি একটু আলাদা হতে পারি, একটু ভিন্ন হতে পারি সেটাই সার্থকতা।'' .

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন